বাংলাদেশ

ময়মনসিংহে লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ইটভাটা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের তোয়াক্কা না করেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মংমনসিংহের গৌরীপুরে চালানো হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। এতে মালিকেরা প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার মুনাফা করলেও সরকার পাচ্ছে না কোন রাজস্ব। প্রতিবছর দুই-একটা অভিযানে নাম মাত্র জরিমানা আদায় করলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয় না প্রশাসন। 

অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট উপর মহলকে ম্যানেজ করেই চলে এসব ইটভাটা। মালিকদের ক্ষমতার দাপটের কাছে কখনো কখনো প্রশাসনও অসহায় হয়ে যায়। অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র গড়ে উঠায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। ফসলের ক্ষয়ক্ষতিসহ জনস্বাস্থ্যের জন্য এখন চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে অবৈধ এই ইটভাটাগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোকাইনগর ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর গ্রামে পাশাপাশি তিনটি ইটভাটা। শাপলা ব্রিকস, তানিয়া ও টিএমএ। ফসলী জমিতে স্থাপিত এসব ভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈরির জোর প্রস্তুতি। রামগোপালপুর ইউনিয়নে রামগোপালপুর গ্রামে সাফায়ত ব্রিকস, এফ এম ব্রিকস ও এসএমএ ইটভাটা ঘুরে দেখা যায় শ্রমিকেরা দিনরাত কাজ করছেন ফিল্ড তৈরির জন্য। 

তন্মধ্যে চলতি মাসের শুরুতে শাপলা ব্রিকসে অভিযান চালান গৌরীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসা. নিকহাত আরা। তিনি জানান, শাপলা ব্রিকসের কোন কাগজপত্র নেই। ওদের বিরুদ্ধে নিম্নমানের ইট তৈরি, সাইজে ছোট, কাঠ পোড়ানোসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসময় অনিয়মের দায়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

শাপলা ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মোঃ স্বপন মিয়া জানান, ২০১৭ সালে তিনি ইটভাটাটি স্থাপন করেছেন। ছাড়পত্রের বিষয়ে প্রথমে বলেন, আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তালিকায় নাম না থাকার কথা জানালে তিনি স্বীকার করেন ছাড়পত্র পাননি। ফসলী জমিতে স্থাপনের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, ইটভাটায় সৃষ্ট কালো ধোয়া সরাসরি মানুষের ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। এতে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, এলার্জিসহ নানা রোগ বালাই দেখা দিতে পারে। 

গৌরীপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মোসলেম উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ১৩টি ইটভাটা রয়েছে। এরমাঝে কিছু ভাটা পরিবেশ অনুমোদন পেয়েছে, অন্যরা চেষ্টা করেছেন।

তবে ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক লোভানা জামিল বলেন, গৌরীপুরে মাত্র একটি ইট ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। ছাড়পত্র ছাড়া যেসব ইটভাটা চলছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন(নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ তে স্পষ্ট বলা আছে- আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা প্রশাসকের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে, কোনো ব্যক্তি ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। 

মতামত দিন